এতিম শিশুদের নিয়ে  বছরের কার্যক্রম শুরু করাটা অনেক মহৎ উদ্যোগ

 মঙ্গলবার (১ জুলাই ২০২৫) রোটারী বর্ষের প্রথম দিন (ফার্স্ট ডে)। এই দিনটি উদযাপনে (সেলিব্রশনে) চাঁদপুর রোটারী ক্লাব ব্যাপক আয়োজন করেছে। এর মধ্যে  বাবুরহাট সরকারি  শিশু পরিবারের হল রুমে   চিকিৎসা সেবা ক্যাম্প, ঔষধ ও মাস্ক বিতরণ, সকালের নাস্তা ও দুপুরের  খাবার পরিবেশন, প্রতিটি শিশুকে নূতন পোশাক প্রদান এবং র‌্যালি ও ফলদ বৃক্ষ রোপণের আয়োজন  করা হয়। চাঁদপুর শহরের বাবুরহাট এলাকার

সরকারি বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং সরকারি শিশু পরিবারের শিক্ষার্থীদের নিয়ে এসব আয়োজন করা হয়। পাশাপাশি ছিলো শিশুদের উদ্দেশ্যে প্রেরণামূলক বক্তব্য প্রদান অনুষ্ঠান। এ অনুষ্ঠানে

প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন  জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন।

জেলা প্রশাসক তাঁর বক্তব্যে বলেন, চাঁদপুর রোটারী ক্লাবের নূতন কমিটি তাদের দায়িত্বগ্রহণ উপলক্ষে রোটারী বর্ষের প্রথম দিন উদযাপন করলো অসহায় এতিম শিশুদের নিয়ে, যা খুবই প্রশংসার দাবি রাখে।

যার যার অবস্থান থেকে চাঁদপুরের রোটারিয়ানবৃন্দ সমাজসেবায় অবদান রাখার অংশ হিসেবে এতিম শিশুদের মাঝে উপস্থিত হয়ে তাদের খোঁজ খবর নেওয়ার বিষয়টি ব্যতিক্রম। তবে শিশু পরিবারের শিশুরা যাতে উন্নত শিক্ষায় শিক্ষিত হতে পারে সেদিকে ভবিষ্যতে সহযোগিতার হাত নিয়ে চাঁদপুর রোটারী ক্লাবকে এগিয়ে আসতে হবে। রোটারিয়ানদের উদ্যোগে সপ্তাহে যদি অংক ও ইংরেজি শিক্ষক দ্বারা টিচিংয়ের ব্যবস্থা করা যায়, তবে এই শিশুদের থেকেও মেধাবী শিক্ষার্থী বের হবে এবং যারা উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে নিজেদের উন্নত ভবিষ্যৎ গড়তে পারবে বলে আমার বিশ্বাস। ক্ষুধা ও দারিদ্র্য দূর করার লক্ষ্যে, সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্যে রোটারী ক্লাব  লাঞ্ছিত, বঞ্চিত ও অবহেলিত মানুষের শান্তির লক্ষ্যে কাজ করছে রোটারীর প্রতিষ্ঠাতা পল হ্যারিসের উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে, যেটা আশাপ্রদ বিষয়। তাঁর বক্তব্যের পূর্বে

জেলা প্রশাসককে রোটারী  পিন পরিয়ে চাঁদপুর রোটারী ক্লাবের অনারারী মেম্বার করায় তিনি ক্লাব কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানান।

অনুষ্ঠানে

বিশেষ অতিথি  হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা পুলিশ সুপার মুহম্মদ  আব্দুর রকিব, পিপিএম।

মোটিভেশনাল স্পিকার হিসেবে   ছিলেন চাঁদপুর সদর উপজেলা  নির্বাহী কর্মকর্তা সাখাওয়াত জামিন সৈকত।

সভাপতিত্ব করেন  চাঁদপুর রোটারী ক্লাবের সভাপতি মো. মোস্তফা (ফুল মিয়া), পিএইচএফ। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা ডা. সৈয়দা বদরুননাহার চৌধুরী, পিএইচএফ, চাঁদপুর রোটারী ক্লাবের সাবেক সভাপতি রোটারিয়ান তমাল কুমার ঘোষ, রোটা. কাজী শাহাদাত, পিএইচএফ ও রোটা. ডা. এমজি ফারুক ভূঁইয়া, চাঁদপুর সেন্ট্রাল রোটারী ক্লাবের সাবেক সভাপতি রোটারিয়ান শেখ মনির হোসেন বাবুল প্রমুখ।অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন চাঁদপুর রোটারী ক্লাবের সাবেক সভাপতি রোটা. শাহেদুল হক মোর্শেদ।মঞ্চে উপবিষ্ট ছিলেন জেলা সমাজসেবা বিভাগের উপ-পরিচালক মো. নজরুল ইসলাম, চাঁদপুর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি  রোটারিয়ান সুভাষ চন্দ্র রায়, পিএইচএফ, চাঁদপুর জেলা কমিউনিটি পুলিশিং কমিটির সভাপতি ও চাঁদপুর রোটারী ক্লাবের সাবেক সভাপতি রোটা. ডা. এস. এম. সহিদ উল্লাহ ও সদ্য সাবেক সভাপতি অ্যাড. মো. নজরুল ইসলাম, সাবেক সভাপতি রোটা. এবিএম নজরুল আমিন চৌধুরী (সাজু), রোটা. নাসির উদ্দিন খান, শেখ মঞ্জুরুল কাদের সোহেল ও খোরশেদ আলম পাটোয়ারী কাঞ্চন ।

অনুষ্ঠানে চাঁদপুর সেন্ট্রাল রোটারী ক্লাবের সভাপতি রোটা. আব্দুল্লাহ আল মামুন, সেক্রেটারী রোটা. গিয়াসউদ্দিন মিলন, সাবেক সভাপতি রোটা. জামাল হোসেন, রোটা. ইঞ্জিনিয়ার আলমগীর পাটোয়ারীসহ আরো অনেকে এবং চাঁদপুর রোটারী ক্লাবের সদস্যবৃন্দ, চাঁদপুর রোটার‌্যাক্ট ক্লাব ও রূপসী রোটার‌্যাক্ট ক্লাবের সদস্যবৃন্দ অংশ নেন। চিকিৎসা সেবা ক্যাম্পে সহযোগিতা করে রেইন বো হসপিটাল।

ডা. বদরুন নাহার চৌধুরী তাঁর বক্তব্যে মাসে একবার সরকারি শিশু পরিবারের শিশুদেরকে  চিকিৎসা সেবা প্রদানের  ঘোষণা দেন। জেলা প্রশাসকের আহ্বানে সাড়া দিয়ে চাঁদপুর রোটারী ক্লাবের সভাপতি রোটা. মো. মোস্তফা (ফুল মিয়া) শিশু পরিবারের শিশুদের জন্যে দুজন শিক্ষক নিয়োগের ঘোষণা দেন। এছাড়া এসএসসি, অষ্টম শ্রেণী ও পঞ্চম শ্রেণীর ভালো ফলাফল অর্জনকারীদের পুরস্কৃত করার প্রতিশ্রুতি দেন।

চাঁদপুর রোটারী ক্লাবের উদ্যোগে রোটারী বর্ষের এই ফার্স্ট ডে সেলিব্রেশন কর্মসূচির সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন ক্লাব সেক্রেটারী রোটা. মো. নাজিমুল ইসলাম (এমিল), কর্মসূচি বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক রোটা. অ্যাড. পলাশ মজুমদার ও সদস্য সচিব রোটা. অ্যাড. আলেয়া বেগম লাকী।